দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় দোকানে আগুন,
সাতকানিয়া : প্রথমে চাঁদা দাবী, চাঁদা না দিলে দোকানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর হুমকির পরেই আগুন দিয়ে এক ব্যবসায়ীর দোকান পুডিয়ে দেয়ার ঘটনায় আতঙ্ক না কাটতেইে নতুন করে একই বাজারের ২২ জন দোকানদারকে ফোন করে চাঁদা দাবীর ঘটনায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ব্যাবসায়িক প্রাণ কেন্দ্র কেরানীহাটের ব্যবসায়ীদের মাঝে চকম আতংক বিরাজ করছি। আতঙ্কগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের অন্তত ১৩ জন থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানীহাটে ঘটেছে এমন ঘটনা।
জানা যায়, কেরানিহাটে শাহ জব্বারিয়া ম্যাট্রেস হাউস নামে একটি দোকানের মালিকের নাম মোহাম্মদ জোনাইদ।
শুত্রবার সকালে দোকানটিতে আগুন লাগে। দোকানের মালিক মোহাম্মদ জোনাইদ বলেন, আগুনে ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাঁর। আগুন লাগার পর একই ব্যক্তি আবার ফোন দিয়ে বলেছে, চাঁদা না দেওয়ায় দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেন। এদিকে ব্যবসায়ীদের চাঁদার দাবীতে হুমকির প্রতিবাদে সোমবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচীর ঘোষনা দিয়েছে কেরানীহাট ব্যবসায়ী সমিতি।
কেরানীহাটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাস্টার জয়নাল আবেদীন জানান, কেবল জোনাইদ নয়, কেরানীহাটের অন্তত ২২ দোকানদারকে মুঠোফোনে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১৩ জন এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে গত শনিবার রাত পর্যন্ত সময়ে এসব অভিযোগ ও জিডি করা হয়। একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে শাহ জব্বারিয়া নামের ম্যাট্রেসের দোকানটির সামনে মুখে মাস্ক পরা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। দোকানটির শাটার ফাঁক করে কোনো কিছু ঢুকিয়ে দেয় ওই ব্যক্তি। এরপর ওই দোকানে আগুন জ্বলে ওঠে। এ ঘটনার পর থেকে কেরানীহাট এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে আমরা সোমবার সকালে মানববন্ধন করবো।
কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে দুটি ফোন নম্বর থেকে দোকানিদের কল করে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা দাবি করা ব্যক্তি নিজেকে ‘এলাকার বাদশাহ’ পরিচয় দেয়। চাঁদা না দিলে দোকানে আগুন দেওয়া ও দোকানিদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কেরানীহাটে মুদি মালামাল বিক্রির দোকান রয়েছে কবির আহমদের। তিনি বলেন, গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন দিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে দোকানে আগুন দেওয়া ও তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে ও রাতেও একই নম্বর থেকে কয়েকবার ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়েছে।
কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম বলেন, এ পর্যন্ত ২০-২২ দোকানিকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। দোকানিরা এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ ও জিডি করার পরও প্রশাসন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখেনি। চাঁদাবাজেরাই গত শুক্রবার ম্যাট্রেসের দোকানটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান বলেন, মুঠোফোনের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ পাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। দোকানে আগুন দেওয়ার অভিযোগও গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
