কর্ণফুলী ডেস্ক:
বিপ্লবোত্তর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে আলোচনা সভা আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে। ১৯ নভেম্বর ২০২৪ পূর্ব লন্ডনের একটি হল রুমে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মাদ আমিন উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা এর পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটের স্পীকার ব্যারিস্টার সাইফুদ্দীন খালেদ।বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইসলামি ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরীর সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম শিপার।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মাদ আমিন উদ্দিন বলেন আমরা জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখতে চাই ,আর এই বাংলাদেশে আমরা কোন ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি চাইনা,তাই আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবী।
আমরা বর্তমান সরকারকে সতর্ক করে বলতে চাই “আওয়ামী লীগ এ দেশে পুনর্বাসিত হলে বিপ্লবীরা এদেশ থেকে নির্বাসিত হবে”
তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন. বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তেই আবু সাইদরা জীবন দিয়েছে, সুতরাং এ বাংলাদেশে আর কোন বৈষম্য সহ্য করা হবেনা।
সংগঠনের সেক্রেটারি আবু তালহা স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
দফা গুলো হলো:
বিপ্লবোত্তর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে জাস্টিস ফর জুলাই ইউকের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবী।
১) জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও
আহতদের নির্ভুল ও সম্পূর্ণ তালিকা রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে অতিসত্বর গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে এবং শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও পদবি দিতে হবে।
২) দ্রুততম সময়ের মধ্যে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে অতিসংকটাপন্ন আহতদের তালিকা করে অতি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করতে হবে।
৩) আহত এবং শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান এবং ক্ষতিপূরণ, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৪) অনতিবিলম্বে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর অপসারণ ও বর্তমান সংবিধান বিলুপ্ত ঘোষণা করে জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে প্রজাতন্ত্রের নতুন সংবিধান প্রস্তুত করতে হবে।
৫)রাষ্ট্র সংস্কারের রোডম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরে কার্যকর, অবাধ, সুস্ট এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আয়োজন করতে হবে।
৬)আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। অনতি বিলম্বে পুলিশ ও বিচার বিভাগসহ সব বিভাগে সার্বিক সংস্কার করতে হবে।এবং জুলাই বিপ্লবের হত্যা সন্ত্রাসের সাথে জড়িত সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৭)ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামীলীগ ও তার সকল সহযোগি সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
৮)ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে গনহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোক সহ সকল অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৯)বিগত ১৬ বছর রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ব্যবহার করা এবং যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
১০)গনমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতাকারী সাংবাদিক এবং গনমাধ্যমকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
১১) দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং সিস্টেম কে আরো জোরালো করে দ্রব্যমূল্য জনগনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
১২)জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসকে পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিস্ট মানুষের মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।
১৩)রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থে বিরোধী নেতা কর্মীদের সহ জুলাই বিপ্লবের সময় দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাস্টিস ফর জুলাই ইউকের –
সহ:সভাপতি: আমিনুল ইসলাম আনহার
সেক্রেটারি :আবু তালহা
এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি :কামরুল হাসান নাসিম
কোষাধ্যক্ষ : আব্দুল হাই সুফিয়ান
সহ: কোষাধ্যক্ষ :মিজানুর রহমান
অফিস সেক্রেটারি : মাসুদ মুফাসসির।
সহ অফিস সেক্রেটারি : মুসাদ্দিক আহমদ
অর্গেনাইজিং সেক্রেটারী :সালাহ উদ্দিন গাজী
সোসাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি :আবুল খায়ের
আন্তর্জাতিক সেক্রেটারি: আবুল বাশার মহসিন
প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি : জাফর ইমরান
সহ প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি : আব্দুর রহমান রাদি
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন মো অলিউর রহমান ,আবু বকর,মো:সাইদুর রহমান,আব্দুল করিম,মো: আজীজ মনসুর চৌধুরী,মইনুদ্দিন সিদ্দিক,আশিক মোসাদ্দেক নাঈম, নাইম রহমান,মো আজিজুল হক। প্রমুখ
অনুস্টান শেষে জুলাই বিপ্লবের চিত্র প্রদর্শনী হয়।