বৃহস্পতিবার , ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অপরাধ

উখিয়ায় বন বিভাগের পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে রাতারাতি

উখিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় বন বিভাগের জায়গায় থাকা একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। পুকুর ভরাটে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাঁধা দিলেও স্থানীয় একটি চক্র পুকুরটি ভরাটের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যা নামলেই।

সন্ধ্যার পর পাহাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে ট্রাকযোগে ওই পুকুর ভরাট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) উখিয়ার ইনানী ইউনিয়নের চোয়াংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এলজিইডি সড়কের পাশে এই পুকুর ভরাট শুরু করে স্থানীয় কয়েকজন। ওই জমি দখলে নিতে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা। ৩০-৪০ বছর আগে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল বন বিভাগের সহায়তায়।

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়েই ইনানীর চোয়াংখালী ফরেস্ট অফিসার মোহাম্মদ মনিসুরের নেতৃত্বে পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করা হয়। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই আবারও পুকুর ভরাট শুরু করে ওই চক্র।

স্থানীয় আব্দুল্লাহ হেডম্যান, রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে তিন ব্যক্তি বন বিভাগের ওই পুকুর ভরাট করছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। তারা পুকুর ভরাটের পাশাপাশি বন বিভাগের গাছও কেটে ফেলে হলে অভিযোগ উঠেছে।

চোয়াংখালী ফরেস্ট অফিসার মোহাম্মদ মনিসুর দৈনিক কর্ণফুলীকে বলেন, খবর পেয়েই আমরা চোয়াংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার পুকুরটির ভরাট বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছি। আব্দুল্লাহ হ্যাডমেনসহ যারা পুকুর ভরাটের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জেনেছি, তারা বলেছে আমাদের কথা দিয়েছে পুকুর ভরাট করবে না। এরপরও যদি অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পুকুর ভরাট করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। আমি আজকে সন্ধ্যায়ও তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি।

অভিযোগ উঠেছে, উখিয়ার ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন সংরক্ষিত বনের জায়গা দখল করছে একটি চক্র। বন বিভাগের নির্লিপ্ততার কারণে সরকারি জমি ও পুকুর রক্ষা করা যাচ্ছে না। এতে উজাড় হচ্ছে ইনানীর বনাঞ্চল, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ।

সংরক্ষিত বনভূমির অনেক জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণও করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ওই এলাকায় পাহাড় কেটে বনভূমি দখল করে শতাধিক ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। চোয়ানখালীর জুম্মাপাড়া কামাল সওদাগরের দোকানের পূর্বপাশে বার্মাইয়া পাড়া এলাকায় সামাজিক বনায়নের জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে অসংখ্য গাছ।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে সংরক্ষিত বনভূমিতে ঘর করতে হলে প্রথমে মিয়া (বিট কর্মকর্তা), তারপর হেডম্যানসহ প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করতে হয়। বিল্ডিং করতে ৫০ হাজার টাকা ও মাটির ঘর করতে ৪-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এসব অর্থ প্রদানের পর ঘর নির্মাণ করতে হয়।

চোয়ানখালী এলাকায় দিনদুপুরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনের অভিযোগও রয়েছে।


সম্পর্কিত খবর